বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৭ মে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে (বাংলা- ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতার নাম সারদা দেবী। তিনি পিতা-মাতার ১৪তম সন্তান ।

মৃত্যু: তিনি ৭ আগস্ট, ১৯৪১ সালে (বাংলা- ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮) মৃত্যুবরণ করেন।

দাম্পত্য জীবন

তিনি ৯ ডিসেম্বর, ১৮৮৩ সালে বেণীমাধব রায় চৌধুরীর কন্যা ভবতারিণী দেবীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর রবীন্দ্রনাথ তার নাম রাখেন মৃণালিনী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ও মৃণালিনীর পাঁচ জন সন্তান ছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পাদিত পত্রিকা

সাধনা- ১৮৯৪
ভারতী – ১৮৯৮
বঙ্গদর্শন – ১৯০১
তত্ত্ববোধিনী’ – ১৯১১

পদক

ডি. লিট- ১৯১৩ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ডি. লিট- ১৯৩৫কাশী বিশ্ববিদ্যালয়
ডি. লিট- ১৯৩৬ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
 ডি. লিট- ১৯৪০অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর উপাধি

বিশ্বকবি- ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়
কবিগুরু- ক্ষিতিমোহন সেন
গুরুদেব- মহাত্মা গান্ধী
  • রবীন্দ্রনাথ কত সালে নাইট উপাধি পান?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাইট উপাধি পান- ব্রিটিশ সরকার থেকে ৩ জুন, ১৯১৫ সালে।

  • রবীন্দ্রনাথ কত সালে এবং কেন নাইট উপাধি বর্জন করেন?

১৩ এপ্রিল, ১৯১৯ সালে পাঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তা বর্জন করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম প্রকাশিত কবিতা

‘হিন্দু মেলার উপহার’ তাঁর মাত্র ১৩ বছর বয়সে কবিতাটি অমৃতবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সূত্র : বাংলা একাডেমি চরিতাভিধান] ।

‘অভিলাষ’ (১৮৭৪): এটি প্রকাশিত হয় ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় (সূত্র: বাংলাপিডিয়া। তিনি মাত্র ৮ বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ

‘কবি-কাহিনী’ (১৮৭৮), এটি তাঁর ১৭ বছর বয়সে প্রকাশিত হয়। এ কাব্যের কবিতাগুলি ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

বি.দ্র:- ‘বনফুল’ রবীন্দ্রনাথ রচিত প্রথম সম্পূর্ণকাব্য। কিন্তু প্রকাশের দিক দিয়ে দ্বিতীয় । কবি এটি মাত্র ১৫ বছর বয়সে রচনা করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত নাটক

‘বাল্মীকি প্রতিভা’ (১৮৮১), এটি তাঁর গীতিনাট্য। রবীন্দ্রনাথ নিজেই বাল্মীকির ভূমিকায় অভিনয় করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস

‘বৌ ঠাকুরানীর হাট’ (১৮৮৩), এটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। উৎসর্গ করেন সৌদামিনী দেবীকে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত ছোটগল্প

ভিখারিনী’ (১৮৭৭)

প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধগ্রন্থ

বিবিধপ্রসঙ্গ’ (১৮৮৩)

প্রথম প্রকাশিত রচনা সংকলন

‘চয়নিকা’ (১৯০৯)

সর্বশেষ প্রকাশিত ছোটগল্প

‘ল্যাবরেটরী’ (১৯৪০)

প্রথম সম্পাদিত পত্রিকা

সাধনা (১৮৯৪)

আরো পড়ুন:- সুকান্ত ভট্টাচার্য

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর উপন্যাস

রাজর্সি১৮৮৭
নৌকাডুবি১৯০৬
চতুরঙ্গ১৯১৬
যোগাযোগ১৯২৯
দুইবোন১৯৩৩
চার অধ্যায়১৯৩৪
মালঞ্চ১৯৩৪
প্রজাপতির নির্বন্ধ১৯০৮
শেষের কবিতা১৯২৯
চোখের বালি১৯০৩
গোরা১৯১০

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কাব্যগ্রন্থ

কাব্যগ্রন্থপ্রকাশিত
কবি-কাহিনী১৮৭৮
প্রভাতসঙ্গীত ১৮৮৩
কড়ি ও কোমল১৮৮৬
সোনার তরী১৮৯৪
চিত্রা১৮৯৬
কথা ও কাহিনী১৯০০
ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলি১৮৮৪
ক্ষণিকা১৯০০
খেয়া১৯০৬
বলাকা১৯১৬
স্মরণ১৯০৩
পলাতকা১৯১৮
পূরবী১৯২৫
পুনশ্চ১৯৩২
আকাশ প্রদীপ১৯৩৯
শেষলেখা১৯৪১
সন্ধ্যা-সংগীত১৮৮২
মানসী১৮৯০
রোগশয্যায়১৯৪০
শেষসপ্তক১৯৩৫
সেঁজুতি ১৯৩৮
শ্যামলী১৯৩৬
নবজাতক১৯৪০
পত্রপুট১৯৩৬
আরোগ্য১৯৪১
জন্মদিনে১৯৪১
নৈবেদ্য১৯০১
স্ফুলিঙ্গ১৯৪৫
কণিকা১৮৯৯
চৈতালি১৮৯৭
কল্পনা১৯০০
উৎসর্গ১৯১৪
মহুয়া১৯২৯
পরিশেষ১৯৩২

সমাজ সম্পর্কিত গল্প

ছুটি
হৈমন্তী
পোস্ট-মাস্টার
দেনাপাওনা
কাবুলিওয়ালা
শাস্তি
দুরাশা
মাস্টার মশাই
খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন

অতিপ্রাকৃত গল্প

ক্ষুধিত পাষাণ
জীবিত ও মৃত
কঙ্কাল

প্রেম সম্পর্কিত গল্প

সমাপ্তি
একরাত্রি
শেষকথা
নষ্টনীড়

রবীন্দ্রনাথের পত্র সংকলন

ছিন্নপত্র
পথে ও পথের প্রান্তে
ভানুসিংহের পত্রাবলী

ভ্রমণকাহিনী

য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র
য়ুরোপ প্রবাসীর ডায়রি
রাশিয়ার চিঠি
পারস্যে
জাপান যাত্রী

রবীন্দ্রনাথের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ

ছেলেবেলা১৯৪০
জীবনস্মৃতি১৯১২
চরিত্রপূজা১৯০৭

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম

ভানুসিংহ ঠাকুর
আন্নাকালী পাকড়াশী
অকপট চন্দ্র ভাস্কর
ষষ্ঠীচরণ দেবশর্মা
শ্রীমতি কনিষ্ঠা

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা

উত্তর:- বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি…। গানটির প্রথম ১০ লাইন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতে বাংলার প্রকৃতির কথা প্রধানভাবে ফুটে উঠেছে।

কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এর প্রথম ৪ লাইন বাজানো হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা এবং শ্রীলংকার জাতীয় সঙ্গীতের সুরকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন গ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার পান

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার পাননি। তিনি ১৯১৩ সালের নোবেল পুরস্কার পান ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদ Song Offerings এর জন্য। নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির সময় তাঁর বয়স ছিল ৫২ বছর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম ভারতীয় ।

১। গীতাঞ্জলি’ কাব্য কত সালে প্রকাশিত হয়?

উত্তর:- ১৯১০ সালে।

২। Song Offerings এর ভূমিকা কে লেখেন?

উত্তর:- ইংরেজ কবি W.B Yeats.

৩। Song offerings প্রকাশিত হয় কত সালে?

উত্তর: -১৯১২ সালে।

৪। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার চুরি হয় কত সালে?

উত্তর:- ২৪ মার্চ, ২০০৪ সালে।

৫। কোথা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার চুরি হয়ে যায়?

উত্তর:- শান্তি নিকেতন থেকে।

রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত উক্তি

আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে। (রাজা)
মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ। (সভ্যতার সংকট)
কিন্তু মঙ্গল আলোকে আমার শুভ উৎসব উজ্জ্বল হইয়া
উঠিল । (কাবুলিওয়ালা)
কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই । (জীবিত ও মৃত)
সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ। (হৈমন্তী)
যাহা দিলাম তাহা উজাড় করিয়াই দিলাম, এখন ফিরিয়া তাকাইতে গেলে দুঃখ পাইতে হইবে। অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মতো এমন বিড়ম্বনা আর নাই। (হৈমন্তী)
আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর। (দেশাত্মবোধক গান)
ও আমার দেশের মাটি, তোমার ‘পরে ঠেকাই মাথা। (দেশাত্মবোধক গান)
মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই । (প্রাণ)
১০আজি এ প্রভাতে রবির কর কেমনে পশিল প্রাণের পর, কেমনে পশিল গুহার আঁধারে প্রভাত পাখির গান! না জানি কেন রে এত দিন পরে জাগিয়া উঠিল প্রাণ। (নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ)
১১খাঁচার পাখি ছিল সোনার খাঁচাটিতে / বনের পাখি ছিল বনে। একদা কী করিয়া মিলন হল দোঁহে, কী ছিল বিধাতার মনে। (দুই পাখি- সোনার তরী)
১২গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা। কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা। রাশি রাশি ভারা ভারা / ধান কাটা হলো সারা। (সোনার তরী)
১৩একখানি ছোটো ক্ষেত আমি একেলা। (সোনার তরী)
১৪ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা, ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ, আধ মরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা। (সবুজের অভিযান- বলাকা)
১৫মরণরে, তুঁহু মম শ্যাম সমান! (ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী)
১৬আমি যে দেখেছি গোপন হিংসা কপট রাত্রিছায়ে হেনেছে নিঃসহায়ে, আমি যে দেখেছি প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। (প্রশ্ন)
১৭তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি।(তোমার সৃষ্টির পথ- শেষলেখা) যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি, এবার পূজায় তারি আপনারে দিতে চাই বলি। (শেষের কবিতা)
১৮আমি শুনে হাসি, আঁখিজলে ভাসি, এই ছিল মোর ঘটে- তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে । (দুই বিঘা জমি)
১৯বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা- বিপদে আমি না যেন করি ভয়। (গীতাঞ্জলি)
২০উদয়ের পথে শুনি কার বাণী / ভয় নাই, ওরে ভয় নাই- নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান / ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। (পূরবী)
২১এ জগতে হায়, সেই বেশী চায় আছে যার ভুরি ভুরি- রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি। (দুই বিঘা জমি)
২২পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হইনু পথে- করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি মিথ্যা দেনার খতে । (দুই বিঘা জমি)
২৩মানুষ যা চায় ভুল করে চায়, যা পায় তা চায় না।(মানুষের ধর্ম)
২৪সন্ধ্যারাগে ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানি বাঁকা। (বলাকা)
২৫আজ হতে শতবর্ষ পরে, কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি কৌতূহলভরে। ( চিত্রা)
২৬বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে ছেলে বেলার গান- বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এলো বান্। (বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর)
২৭নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে। (আষাঢ়)
২৮এখন আমারে লহ করুণা করে। (সোনার তরী)
২৯ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই- ছোটো সে তরী আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি। (সোনার তরী)
৩০নমোঃ নমোঃ নমোঃ সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!(দুই বিঘা জমি)
৩১হে মোর চিত্ত, পুণ্য তীর্থে জাগো রে ধীরে এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে। (হে মোর চিত্ত, পুণ্য তীর্থে- গীতাঞ্জলি)
৩২বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি, সে আমার নয়। (নৈবেদ্য)
৩৩বুকের রক্ত দিয়া আমাকে যে একদিন দ্বিতীয় সীতাবিসর্জনের কাহিনী লিখিতে হইবে সে কথা কে জানিত। (হৈমন্তী)
৩৪এ যে দুর্লভ, এ যে মানবী, ইহার রহস্যের কি অন্ত আছে। (হৈমন্তী)
৩৫হায়রে, তাহার বউমার প্রতি বাবার সেই মধুমাখা পঞ্চস্বর একেবারে এমন বাজখাঁই নাদে নামিল কেমন করিয়া? (হৈমন্তী)
৩৬শিশুরাজ্যে এই মেয়েটি একটি ছোটখাট বর্গির উপদ্রব বলিলেই হয়। (সমাপ্তি)
৩৭সমগ্র শরীরকে বঞ্চিত করে কেবল মুখে রক্ত জমলে তাকে স্বাস্থ্য বলা যায় না। (রাশিয়ার চিঠি)

আরো পড়ুন:-হুমায়ূন আহমেদ

Share this

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *